
২০২৫ সালের জুলাইয়ে, ঠিক ভোরের আলো ফোটার আগেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আকাশে গর্জে উঠল থাইল্যান্ডের F-16 যুদ্ধবিমান। মুহূর্তেই দুটি বোমা পড়ল কম্বোডিয়ার সামরিক ঘাঁটিতে। ১২ জন নিহত, ৪০,০০০+ মানুষ গৃহচ্যুত, আর একটি দীর্ঘকালীন বিরোধ আবারও রক্তাক্ত রূপে ফিরে এল – যাকে বলা হচ্ছে “Thailand Cambodia War 2025“।
🏛️ মন্দির থেকে যুদ্ধ – Thailand Cambodia War 2025 এর শিকড় কোথায়?
এই সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে একটি প্রাচীন হিন্দু মন্দির – প্রিয়ভীর (Priyhar) মন্দির। ১১শ শতকে খমের সাম্রাজ্যের অধীনে তৈরি এই মন্দির উৎসর্গিত ছিল শিবের উদ্দেশ্যে।
সমস্যার শুরু হয় ফরাসি উপনিবেশিক মানচিত্র থেকে।
১৯০৭ সালে, যখন কম্বোডিয়া ফ্রান্সের অধীনে ছিল, তখন ফরাসিরা থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মাঝে ৮০০ কিমি সীমান্ত নির্ধারণ করে। কিন্তু মন্দির-সংলগ্ন অঞ্চলগুলি ছিল অস্পষ্ট, এবং সেখান থেকেই শুরু হয় সীমান্ত দ্বন্দ্ব।
🇰🇭 কম্বোডিয়া বনাম 🇹🇭 থাইল্যান্ড: কার দাবি কতটা যুক্তিসঙ্গত?
- কম্বোডিয়ার দাবি: প্রিয়ভীর মন্দির সম্পূর্ণরূপে তাদের এলাকা।
- থাইল্যান্ডের দাবি: মানচিত্রে ভুল রয়েছে, তাই তাদের সার্বভৌম এলাকা বলা চলে।
২০০৮ সালে প্রথম বড় সংঘর্ষ ঘটে, নিহত হয় ২৮ জন।
২০১১ সালে জাতিসংঘ মধ্যস্থতা করে, এবং আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (ICJ) ২০১৩ সালে রায় দেয়: মন্দির কম্বোডিয়ার এলাকা।
কিন্তু থাইল্যান্ড রায় মানতে নারাজ ছিল, আর তাই সমস্যা রয়ে যায়।

🔥 2025: Thailand Cambodia War 2025 আবার কেন ছড়াল?
২৮ মে, ২০২৫: থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া-লাওস সীমান্তে গুলি বিনিময় হয়।
একজন কম্বোডিয়ান সেনা নিহত।
- কম্বোডিয়া বলে: থাই সেনারা আগেই গুলি ছোড়ে।
- থাইল্যান্ড বলে: তারা শুধু আত্মরক্ষামূলক জবাব দিয়েছে।
এরপর রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়তে থাকে।
📞 ফাঁস হওয়া ফোনকল: রাজনৈতিক আগুনে ঘি
একটি ফোনকল ফাঁস হয় থাই প্রধানমন্ত্রী পেটন চিনোয়া এবং কম্বোডিয়ার প্রধান হুনেন-এর মাঝে।
চিনোয়া, হুনেন-কে “uncle” সম্বোধন করে নিজের দেশের সেনাবাহিনীকে সমালোচনা করেন।
এতে থাইল্যান্ডে বিরাট জনরোষ তৈরি হয়।
চিনোয়া-কে সাসপেন্ড করা হয়, কিন্তু সীমান্তে উত্তেজনা থামেনি।
💣 July Landmine Attacks: যুদ্ধের নতুন দিক
- ১৬ জুলাই: এক থাই সেনা ল্যান্ডমাইনে পা দিয়ে পা হারান।
- ২৩ জুলাই: আরেক বিস্ফোরণে ৫ জন সেনা আহত হন।
এরপর থাইল্যান্ড জানায়:
“আমাদের সার্বভৌমত্ব ও সীমান্তবাসীর নিরাপত্তার জন্য আমরা সব সীমান্তপথ বন্ধ করছি।”
কম্বোডিয়া জবাবে রাজনৈতিক সম্পর্ক কমিয়ে আনে।
✈️ Thailand Airstrikes: F-16 দিয়ে আক্রমণ – যুদ্ধ শুরু?
২৪ জুলাইয়ের ভোরে কম্বোডিয়ার আকাশে দেখা যায় থাইল্যান্ডের F-16 যুদ্ধবিমান। দুটি বোমা ফেলে কম্বোডিয়ান ঘাঁটি ধ্বংস করে দেয়।
এই ঘটনায় নিহত হয় ১২ জন এবং বিপুলসংখ্যক মানুষ বাস্তুচ্যুত হন।
🎙️ দুই পক্ষের ভিন্ন ভাষ্য – কে শুরু করল Thailand Cambodia War 2025?
থাইল্যান্ডের দাবি:
কম্বোডিয়ার ড্রোন আগেই ঢুকে পড়ে, আমাদের সেনা সাবধান করলেও তারা গুলি চালায়। তাই আত্মরক্ষায় হামলা করি।
কম্বোডিয়ার দাবি:
থাই বাহিনী চুক্তি ভেঙে মন্দিরের দিকে আগায়, এবং আগাম হামলা করে। আমাদের সেনারা বাধ্য হয়ে আত্মরক্ষা করে।
🪖 সামরিক শক্তির তুলনা: Thailand vs Cambodia
বৈশিষ্ট্য | থাইল্যান্ড | কম্বোডিয়া |
---|---|---|
সামরিক বাজেট | $5.7 বিলিয়ন | $1.3 বিলিয়ন |
সেনা সদস্য | ২,৪৫,০০০ জন | ১,২৪,৩০০ জন |
F-16 জেট | ২৮টি | ০ (শূন্য) |
ড্রোন ও অস্ত্র | আধুনিক | সীমিত |
সামরিক দিক থেকে Thailand Cambodia War 2025-এ থাইল্যান্ড এগিয়ে।
🕊️ জাতিসংঘ কি থামাতে পারবে এই যুদ্ধ?
থাইল্যান্ড আন্তর্জাতিক সমর্থন ও নিন্দা চেয়েছে।
কম্বোডিয়া চায় জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ হস্তক্ষেপ করুক।
কিন্তু সমস্যাটা শুধুই গুলি বা বোমার নয় – সমস্যা গর্ব, ইতিহাস ও নেতৃত্বের ব্যর্থতা।
🔚 উপসংহার: Thailand Cambodia War 2025 – কার চোখ আগে পলক ফেলে?
এই যুদ্ধ কেবল একটি মন্দির বা সীমান্ত নিয়ে নয়।
এটি রাজনৈতিক ব্যর্থতা, জাতীয় অহংকার, এবং ইতিহাসের গর্জন।
আজকের দিনে পিছু হটা মানে পরাজয়, আর এই মানসিকতা থেকেই Thailand Cambodia War 2025 আরও জটিল হয়ে উঠছে।
প্রশ্ন হলো: কে আগে মাথা নোয়াবে?
কারণ দুই পক্ষই এখন চোখ মেলেই যুদ্ধ করছে, পলক ফেলার সাহস কারও নেই।