
শেষ পর্যন্ত অভিষেক ব্যানার্জী যাচ্ছেন সর্বদলীয় প্রতিনিধি দলের সঙ্গে। স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। কিরণ রিজিজু ফোনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলার পরেই এই সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়ে—তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে অভিষেকই যাচ্ছেন আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতকে প্রতিনিধিত্ব করতে।
এখান থেকেই বোঝা যাচ্ছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক কৌশলে অভিষেক ব্যানার্জীর অবস্থান কতটা দৃঢ়। ঠিক যেন “তৃণমূল মানেই অভিষেক”—দলের সঙ্গে তার নাম স্বয়ংক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়ে গেছে।

অতীত মন্তব্য এবং বর্তমান বাস্তবতা
অভিষেক ব্যানার্জী পূর্বে সেনাবাহিনীর অফিসারদের বিদেশে পাঠিয়ে তাদের অপারেশনের ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তার মতে, অপারেশনের মূল হোতাদের বিদেশে পাঠানো হলে দেশের গোপন নিরাপত্তা তথ্য ফাঁস হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। যদিও পরে নিজের নামই যখন সর্বদলীয় প্রতিনিধির তালিকায় আসে, তখন সেই আপত্তি আর থাকলো না।
এখানে প্রশ্ন ওঠে, একজন রাজনৈতিক নেতা যখন বিদেশে গিয়ে দেশের পক্ষে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মুখ খুলবেন, তখন তার বক্তব্যে সংযম ও যুক্তির পরিচয় থাকা উচিত। বিশেষ করে যখন তিনি আগে সেই প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করেছেন, তখন।
স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকে বিতর্ক
স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকে অভিষেক ব্যানার্জী সেনা অপারেশন এবং জঙ্গি অনুপ্রবেশ বিষয়ে প্রশ্ন করেন। কিন্তু তার করা প্রশ্নের অধিকাংশই ছিল নিরাপত্তা বিভাগের আওতার বাইরে। প্রতিরক্ষা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিষয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি নিজেই বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি কোন মন্ত্রককে প্রশ্ন করবেন সেটাও ঠিকভাবে জানেন না।
এই ঘটনার মাধ্যমে স্পষ্ট, একজন প্রতিনিধির পক্ষে শুধু রাজনৈতিক প্রভাব নয়, নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক জ্ঞানের সমান প্রয়োজন রয়েছে।
মমতার ভরসা, অভিষেকের যাত্রা
তৃণমূল কংগ্রেস সোশ্যাল মিডিয়ায় জানায়—”আমাদের মাননীয়া নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জাতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সর্বদলীয় প্রতিনিধিদলে মনোনীত করেছেন।”
তবে প্রশ্ন রয়ে যায়, অভিষেকের কি সত্যিই আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিত্বের মতো দায়িত্ব নেওয়ার মানসিক পরিপক্বতা তৈরি হয়েছে?

বিরোধী হয়েও সরকারের পাশে
বিরোধী দল হয়েও এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের পাশে দাঁড়ানো নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। পাকিস্তানকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে এক্সপোজ করতে সব দলের ঐক্য গুরুত্বপূর্ণ। তবে, এই কাজটি যথাযথ দক্ষতা ও কৌশলের সঙ্গে পরিচালনা করা প্রয়োজন।
শেষ কথা
অভিষেক ব্যানার্জীর যাত্রা যেমন একদিকে রাজনৈতিক কৌশলের প্রতিফলন, তেমনি অপরদিকে এটি একটি বড় পরীক্ষাও। কেবল যুক্তির মধ্যে নয়, আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও নিরাপত্তা বিষয়ে পরিপক্বতা তার বক্তব্য ও অবস্থানে উঠে আসবে কিনা, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
🔹 আপনার মতামত কী?
অভিষেক ব্যানার্জী কি সত্যিই উপযুক্ত প্রতিনিধি?
নিচে মন্তব্য করে জানান, এবং এই বিষয়ে আরও আপডেট পেতে আমাদের চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন।
Hi, this is a comment.
To get started with moderating, editing, and deleting comments, please visit the Comments screen in the dashboard.
Commenter avatars come from Gravatar.