
Bihar Elections 2025 যতই এগিয়ে আসছে, ততই উত্তপ্ত হচ্ছে বিহারের রাজনৈতিক আবহ। এই উত্তেজনার কেন্দ্রে রয়েছে একটি বিতর্কিত প্রশাসনিক পদক্ষেপ—Special Intensive Revision (SIR)। এই প্রক্রিয়ায় নির্বাচন কমিশন প্রায় 52 লক্ষ ভোটার-এর নাম বাদ দিয়েছে বলে জানা গেছে। আর তারই প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে বিহার বিধানসভা।
এবারের প্রতিবাদ শুধু বিধানসভার ভেতরে নয়, বাইরে রাজপথেও ছড়িয়ে পড়েছে। বিরোধী দলগুলো অভিযোগ তুলেছে—এই পদক্ষেপে গণতন্ত্র বিপন্ন, আর রাজনৈতিক উদ্দেশ্য স্পষ্ট।
চলুন দেখে নেওয়া যাক SIR বিতর্ক ঘিরে সেই ৭টি মূল দিক যা নিয়ে তোলপাড় বিহার।
১. বিধানসভায় গোলমাল: RJD বনাম JDU-BJP দ্বন্দ্ব
বিহার বিধানসভা মঙ্গলবার বিকেল ২টা পর্যন্ত মুলতবি রাখতে হয়েছিল। তার কারণ, RJD ও JDU-এর মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ ও অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ। বিজেপিও এই বাকযুদ্ধে অংশ নিয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ—সরকার পক্ষ নির্বাচন কমিশনের নামে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিচ্ছে।
২. Tejashwi Yadav-এর অবস্থান: SIR নয়, স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন
RJD নেতা Tejashwi Yadav স্পষ্ট বলেন, “আমরা SIR-এর বিরোধিতা করছি না। কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা থাকা উচিত। নির্বাচন কমিশন যেন পক্ষপাতদুষ্ট না হয়ে কাজ করে।” তাঁর মতে, সাধারণ মানুষ যাতে তাদের নাম ঠিকভাবে ভোটার তালিকায় রাখতে পারেন, সেটাই জরুরি।
৩. 52 লক্ষ নাম বাদ: পরিকল্পিত না কি রুটিন প্রক্রিয়া?
নির্বাচন কমিশন দাবি করছে, এই 52 লক্ষ নাম বাদ পড়েছে কারণ তারা হয় মৃত, নয়তো ঐ নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা নন। বিরোধীরা বলছে, এত বিশাল সংখ্যার মানুষ হঠাৎ করে বাদ পড়া শুধুই পরিসংখ্যান নয়—এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
৪. চিরাগ পাসওয়ানের মন্তব্য: দায়িত্ব রাজনৈতিক দলেরও
LJP নেতা Chirag Paswan বলেন, “Booth Level Agents (BLA)-দের কাজই হল সাধারণ ভোটারদের সাহায্য করা, বিশেষ করে যারা ডকুমেন্টেশন করতে পারছেন না।” তাঁর মতে, অভিযোগ নয়—রাজনৈতিক দলের উচিত মাঠে নেমে কাজ করা।

৫. ১১টি নথি এক মাসে জমা: বাস্তবসম্মত কি না?
ভোটার তালিকায় নাম রাখতে হলে ভোটারদের থেকে ১১ ধরনের নথির মধ্যে যেকোনো একটি চাওয়া হয়েছে—যেমন Domicile Certificate, Caste Certificate, Property Document ইত্যাদি। বিরোধীদের মতে, বিহার এমনিতেই নথি ঘাটতির রাজ্য। তাই এক মাসের মধ্যে এত কিছু জোগাড় করা সাধারণ মানুষের পক্ষে অসম্ভব।
৬. সুপ্রিম কোর্টে বিরোধীদের পদক্ষেপ: ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত স্থগিতের দাবি
১২টি বিরোধী দল সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে, যাতে SIR প্রক্রিয়া Bihar Elections 2025 শেষ না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয়। তাদের মতে, এই তালিকা সংশোধনের মাধ্যমে লক্ষাধিক মানুষ ভোটাধিকার হারাতে পারেন। তারা বলছে—এটা একটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র।
৭. গ্রাউন্ড লেভেল স্ট্র্যাটেজি: বিরোধীদের তিন ধাপের কৌশল
Bihar Elections 2025-এ বিরোধীরা তিনটি প্রধান কৌশল নিচ্ছে:
- আদালতের আশ্রয় নেওয়া – সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে।
- মাঠ পর্যায়ে কাজ – ১.৫ লক্ষ BLA নিযুক্ত করেছে, যারা BLO ও ERO-র সঙ্গে মিলে ভোটারদের তথ্য যাচাই করছে।
- সচেতনতা প্রচার – জনগণকে অনুরোধ করছে যাতে তারা Domicile, Caste Certificate বা Property Document তৈরি করেন।
এই পদক্ষেপগুলো শুধু বিরোধীরা নিচ্ছে না, বরং সকল রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকেই জনগণকে নথিপত্র প্রস্তুতের আহ্বান জানানো হচ্ছে।
✅ Bihar Elections 2025: নির্বাচন কমিশনের সাফাই ও বিতর্কের সারমর্ম
নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য:
- এটি কোনও নতুন প্রক্রিয়া নয়। স্বাধীনতার পরেও ৪ বার এরকম Special Revision হয়েছে।
- এবার প্রযুক্তির সাহায্যে অনলাইনে আবেদন ও আপিলের সুযোগ রাখা হয়েছে।
- কেউ ভুলভাবে বাদ পড়লে, তিনবার আপিল করার সুযোগ রয়েছে।
তবে বিরোধীদের মতে, বাস্তবতার মাটিতে দাঁড়িয়ে এটা কার্যকর নয়। সাধারণ মানুষ এখনো ডিজিটালভাবে পিছিয়ে আছে, বিশেষত গ্রামীণ বিহারে।
📌 উপসংহার: কী হতে চলেছে সামনে?
Bihar Elections 2025 ঘিরে এই বিতর্ক ভবিষ্যতের রাজনৈতিক মানচিত্র নির্ধারণ করতে পারে। একদিকে বিরোধীরা যেখানে জনগণের পক্ষে দাঁড়ানোর দাবি করছে, অন্যদিকে সরকারপক্ষ বলছে—“এই প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও আইনানুগ।”
গণতন্ত্রের মূলভিত্তি হল ভোটাধিকার। তাই ভোটার তালিকা থেকে 52 লক্ষ নাম বাদ পড়া নিছক সংখ্যা নয়, বরং এক বৃহৎ রাজনৈতিক ও সামাজিক বিতর্কের সূচনা।