
কলকাতার আকাশে রাতের অন্ধকারে ঘোরাফেরা করছে সাতটি রহস্যময় ড্রোন। ঘটনাটি ঘটেছে হেস্টিংস, ব্রিগেড, দ্বিতীয় হুগলি সেতু ও ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল চত্বরের মতো অত্যন্ত স্পর্শকাতর এলাকায়। স্থানীয়দের দাবি, এই ড্রোনগুলি রাতের আকাশে বেশ কিছুক্ষণ চক্কর কাটার পর হঠাৎ করেই অদৃশ্য হয়ে যায়। সবচেয়ে বিস্ময়ের বিষয়, এত নজরদারির মধ্যেও কলকাতা পুলিশ এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি—এই ড্রোনগুলো কোথা থেকে এসেছিল এবং কোথায় ফিরে গেছে।
এই ঘটনার পর শহরবাসীর মনে প্রশ্ন উঠেছে: কলকাতার মতো নিরাপদ শহরে এমন নজরদারি ফাঁকি দিয়ে কীভাবে উড়ে বেড়াল এই ড্রোনগুলো? পুলিশের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি থাকার পরেও এমন ঘটনাকে অনেকেই মানতে পারছেন না। সূত্রের খবর, গোয়েন্দা বিভাগ ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনো চূড়ান্ত তথ্য সামনে আসেনি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ড্রোন ওড়ানো এখন বেশ কিছু নিয়মের মধ্যে পড়ে। অথচ, এই ঘটনায় কোনো অনুমতি ছাড়াই এমন স্পর্শকাতর এলাকায় ড্রোনের উপস্থিতি বড়সড় নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ইঙ্গিত দেয়। বিশেষ করে দেশের বর্তমান ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে, যেখানে পাকিস্তান ও অন্যান্য প্রতিবেশী দেশগুলি ড্রোন প্রযুক্তি ব্যবহার করে চরবৃত্তির অভিযোগে বারবার ধরা পড়েছে, সেখানে এই ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
বিশেষজ্ঞদের আরও দাবি, সীমান্তবর্তী রাজ্য হিসেবে পশ্চিমবঙ্গ এখন অনেকটাই সংবেদনশীল। একদিকে বাংলাদেশ সীমান্তে বেআইনি অনুপ্রবেশ, অন্যদিকে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে ব্যবহৃত হতে পারে এই ধরনের প্রযুক্তি। এই অবস্থায় স্থানীয় পুলিশের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বাহিনীর নজরদারি আরও জোরদার করার দাবি উঠছে।
কলকাতা পুলিশ বলছে, তদন্ত চলছে এবং খুব শীঘ্রই ড্রোনের উৎস এবং উদ্দেশ্য প্রকাশ্যে আনা হবে। তবে নাগরিকদের প্রশ্ন, যদি এই ড্রোনগুলো ছবি তুলে বা অন্য কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে শহরে প্রবেশ করে থাকে, তাহলে এত সহজেই তারা পালিয়ে যেতে পারলো কীভাবে?
এই ঘটনার পর গোটা শহরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কড়া করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শহরবাসী এবং বিশেষজ্ঞরা দাবি করছেন, ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনাকে রুখতে আরও শক্তিশালী নজরদারি ব্যবস্থা প্রয়োজন।
শহর কলকাতার নিরাপত্তা যে বড়সড় প্রশ্নের মুখে, তা বলাই যায়। এখন দেখার, তদন্ত কতদূর গিয়ে পৌঁছয় এবং কতটা সময়ে প্রশাসন এই রহস্যের সমাধান করতে পারে।