
চেনাব রেল ব্রিজ উদ্বোধন হলো ভারতের ইঞ্জিনিয়ারিং দক্ষতার এক ঐতিহাসিক নিদর্শন। এটি শুধুমাত্র একটি রেল ব্রিজ নয়, বরং কাশ্মীর উপত্যকা এবং বাকি দেশের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের এক অনন্য প্রতীক। আজ থেকে জম্মু থেকে সরাসরি ট্রেনে চেপে যাওয়া যাবে কাশ্মীরে, যা আগে ছিল অসম্ভব।
🔶 চেনাব রেল ব্রিজ: প্রযুক্তি, সাহস ও দেশপ্রেমের প্রতীক
৬ই জুন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জম্মুর রিয়াসিতে অবস্থিত বিশ্বের উচ্চতম রেল ব্রিজ – চেনাব রেল ব্রিজ–এর উদ্বোধন করেন। তাঁর সাথে ছিলেন জম্মু ও কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ এবং কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।
চেনাব নদীর ওপর নির্মিত এই ব্রিজটি ৩৫৯ মিটার উচ্চতায়, যা আইফেল টাওয়ারের থেকেও উঁচু এবং সাতগুণ বেশি উঁচু কুতুব মিনারের চেয়ে। এই রেলপথটি দীর্ঘ প্রতীক্ষিত উধমপুর-শ্রীনগর-বারামুলা রেল প্রকল্প–এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

🛤️ এখন জম্মু থেকে সরাসরি কাশ্মীর — ট্রেনে!
এতদিন পর্যটক বা তীর্থযাত্রীদের জম্মু পর্যন্ত ট্রেনে এসে, তারপর গাড়িতে বা বিমানে যেতে হতো কাশ্মীরে। রাস্তায় ল্যান্ডস্লাইড, খারাপ আবহাওয়া, বা দুর্ঘটনার ঝুঁকি ছিল। এখন থেকে রিয়াসি থেকে কাশ্মীর ভ্যালি পর্যন্ত সরাসরি ট্রেন চলবে, যা নিরাপদ, আরামদায়ক এবং সাশ্রয়ী।
এই নতুন রুটে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস-এর মতো আধুনিক ট্রেন চলবে। এর ভাড়াও তুলনামূলকভাবে কম — সাধারণ শ্রেণিতে ₹৭১৫ এবং এক্সিকিউটিভ ক্লাসে ₹১০০০ টাকার কিছু বেশি।
🌨️ শীতে বরফ গলাতে প্রযুক্তি
এই ট্রেনগুলি উন্নত প্রযুক্তিতে তৈরি, যাতে শীতকালে বরফ জমে না থাকে — বিশেষ হিটিং সিস্টেম, হট ওয়াটার ফ্যাসিলিটি, চার্জিং পোর্ট, ফ্রিজ, এবং আরামদায়ক সিট সবই থাকছে।
🇮🇳 সন্ত্রাস নয়, সংযোগই কাশ্মীরের ভবিষ্যৎ
পাকিস্তান সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী মনোভাব যেখানে কাশ্মীরকে আলাদা রাখতে চেয়েছিল, সেখানে এই রেল সংযোগ প্রমাণ করে — কাশ্মীর চিরকাল ভারতের অঙ্গ ছিল, আছে, থাকবে। এই রেললাইন শুধুই যোগাযোগের মাধ্যম নয়, এটি একটি জাতীয় সংহতির প্রতীক।
🏞️ উপসংহার: ইতিহাসে লেখা হলো নতুন অধ্যায়
চেনাব ও আঞ্জি ব্রিজ এখন শুধুমাত্র ইঞ্জিনিয়ারিং মাইলফলক নয়, বরং নতুন ভারতের শক্তি, আত্মবিশ্বাস ও অগ্রগতির প্রতিচ্ছবি। প্রধানমন্ত্রী মোদির মুখের গর্বিত হাসি এবং দেশের উচ্ছ্বাস — সবই বলছে, এটা শুধু একটি ট্রেন নয়, এটা আমাদের সংহতির রেলপথ।