ভারত-রাশিয়ার যৌথ উদ্যোগে তৈরি হচ্ছে নতুন ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র, কাঁপছে পাকিস্তান ও চীন!

চীন ও পাকিস্তানের জন্য খারাপ খবর: কাঁপছে পাকিস্তান ও চীন, রাশিয়া ও ভারত একসাথে তৈরি করছে অত্যাধুনিক ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র, ব্যয় হবে ৩০০ কোটি টাকা

ভারত ও রাশিয়ার যৌথ উদ্যোগে তৈরি হওয়া ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্রের কার্যক্ষমতা ‘অপারেশন সিন্দুর’-এ প্রমাণিত হওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে একটি নতুন ও উন্নত সংস্করণ তৈরির আলোচনা শুরু হয়েছে। পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর (PoK)-এ সন্ত্রাসবাদীদের ঘাঁটি টার্গেট করে এই মিশনে ব্রহ্মোস ব্যবহৃত হয়েছিল, যার ফলাফল ছিল অত্যন্ত কার্যকরী।

কাঁপছে পাকিস্তান ও চীন |লক্ষ্যে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ ও ‘আত্মনির্ভর ভারত’

নতুন এই ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির জন্য উত্তরপ্রদেশের লখনউতে একটি অত্যাধুনিক কারখানা তৈরি হয়েছে, যার ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। ৮০ হেক্টর জমির উপর গড়ে ওঠা এই ব্রহ্মোস অ্যারোস্পেস ইউনিটটি ১১ মে উদ্বোধন করেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। এটি উত্তরপ্রদেশ প্রতিরক্ষা শিল্প করিডরের একটি প্রধান প্রকল্প। এখানে থাকবে একটি অ্যাঙ্কর ইউনিট PTC এবং তার সহায়ক সাতটি ইউনিট।

এই কারখানা শুধুমাত্র ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদনের সক্ষমতা বাড়াবে না, বরং আত্মনির্ভর ভারতের লক্ষ্যে আরও একধাপ এগিয়ে দেবে দেশকে। আগে যেসব উপাদান রাশিয়া থেকে আমদানি করতে হত, সেগুলি এখন ভারতেই তৈরি করা হবে, ফলে উৎপাদন খরচ অনেকটা কমে যাবে। এছাড়াও এই নতুন উদ্যোগ কর্মসংস্থান তৈরি করবে এবং স্থানীয় অর্থনীতিতে গতি আনবে।

একটি ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করতে কত খরচ হয়?

কাঁপছে পাকিস্তান ও চীন

বর্তমানে একটি ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করতে আনুমানিক খরচ হয় প্রায় ৩৪ কোটি টাকা। তবে দেশে উৎপাদন শুরু হলে এবং বিভিন্ন অংশে দেশীয় উপাদান ব্যবহৃত হলে এই খরচ অনেকটাই কমে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়াও এই প্রকল্পের সাথে জড়িত সহায়ক শিল্পগুলিও লাভবান হবে—যেমন এয়ারোস্পেস গ্রেড ম্যাটেরিয়াল প্রস্তুতকারক, ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রাংশ নির্মাতা ইত্যাদি।

আন্তর্জাতিক রপ্তানি ও ভারতের প্রতিরক্ষা শক্তির উত্থান

ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদনে স্বনির্ভরতা অর্জন করলে ভারত আন্তর্জাতিক বাজারে আরও বেশি রপ্তানি করতে পারবে। বর্তমানে ভারত বিশ্বের অন্যতম ক্ষেপণাস্ত্র রপ্তানিকারক দেশে পরিণত হওয়ার পথে এগিয়ে চলেছে। এই রপ্তানির ফলে দেশের অর্থনীতিতেও বড়সড় ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

অপারেশন সিন্দুরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শক্তি প্রদর্শন

সম্প্রতি ১০ মে, ভারত পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডির নুর খান বিমানঘাঁটি লক্ষ্য করে SU-30 MKI ফাইটার জেট থেকে ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। এই বিমানঘাঁটি পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলের বিমান অভিযানগুলোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। এটি পাকিস্তানের স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানস ডিভিশনের নিকটবর্তী—যেখানে দেশের পরমাণু অস্ত্র ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র অবস্থিত।

এছাড়াও ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে জইশ-ই-মহম্মদের সদর দপ্তর, যা বাহাওয়ালপুরে অবস্থিত, তাতে হামলা চালানো হয়। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তান বা চীনের কোনও এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম এখনো ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্রকে আটকাতে সক্ষম নয়।

ব্রহ্মোসের প্রযুক্তিগত দিক

ব্রহ্মোসের সর্বোচ্চ গতি Mach 2.8—মানে এটি শব্দের গতির প্রায় তিনগুণ দ্রুত। এর পাল্লা ২৯০ কিমি থেকে ৪০০ কিমি পর্যন্ত। এই ক্ষেপণাস্ত্রের গ্রাউন্ড-টু-গ্রাউন্ড, শিপ-টু-গ্রাউন্ড ও এয়ার-লঞ্চড ভার্সন ইতিমধ্যেই ভারতীয় সেনাবাহিনী, নৌসেনা ও বিমানবাহিনীতে ব্যবহৃত হচ্ছে।

উত্তরপ্রদেশ থেকে ভারতীয় প্রতিরক্ষা শিল্পের নতুন অধ্যায়

উত্তরপ্রদেশে স্থাপিত এই নতুন কারখানাটি শুধু একখানি কারখানা নয়, বরং এটি ভারতকে বিশ্বমানের প্রতিরক্ষা উৎপাদনের দিকে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেন, “আপনারা অপারেশন সিন্দুরে ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্রের একটি ঝলক দেখেছেন। যদি কেউ না দেখে থাকে, পাকিস্তানের লোকজনকে জিজ্ঞাসা করুন—ব্রহ্মোসের আসল শক্তি কী।”

Related Posts

ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সিজফায়ার বিতর্ক: ট্রাম্পের দাবি খারিজ, দিল্লির কড়া বার্তা

ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সিজফায়ার বিতর্ক, ট্রাম্প প্রশাসনের ‘সিজফায়ার’ দাবি খারিজ, ভারত পুনরায় জানাল – অপারেশন সিন্ধূর চলাকালীন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনও বাণিজ্য আলোচনা হয়নি সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের এক আদালত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘সিজফায়ার’ দাবি…

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইঙ্গিত! ট্রাম্প-পুতিন দ্বন্দ্বে নতুন মোড়

ajke.in প্রতিবেদক | আন্তর্জাতিক সংবাদ | মস্কো/ওয়াশিংটন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইঙ্গিত! ট্রাম্প-পুতিন দ্বন্দ্বে বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে আক্রমণ…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *